ছোটদের কথা
ছোটদের কথা
একদিন বিকালে ঝম-ঝম করে বৃষ্টি এল তার সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া। ঝুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল বিলু। রান্নাঘর থেকে মা হেঁকে বললেন, ‘‘বিলু কোথায় রে? গরম জামাটা গায়ে গলিয়ে নে, যা বৃষ্টি তাতে তোর ঠান্ডা লাগতে পারে।’’ বিলুর খেয়াল নেই, এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে বাইরে। সামনে রাস্তায় তখন লোকজনের ছুটোছুটি, হাটুরেরা মালপত্র নিয়ে যে যার ঢুকে পড়েছে রাস্তার পাশে দোকানগুলিতে। একটা গরুর গাড়ী দাঁড়িয়ে আছে। অনেকক্ষণ গরুগুলো ভিজছে। ভীষণ ঝড়ে তাদের সুপুরি গাছগুলো দুলছে। বাতাবি লেবু গাছটায় একটা কাক বসে ভিজছে। ভোঁ ভোঁ করতে করতে রিক্সাগুলো ছুটছে। বাসগুলো ছুটছে বিদ্যুৎ গতিতে। বৃষ্টির দিনে বিলুর ভারী মজা। এক মনে তাকিয়ে আছে বাইরে। মার কথাগুলো যেন তার কানেই যাচ্ছে না এর মধ্যে আবার আলো নিভে গেছে। বিলুর খুব মজা, এখন আর পড়তে হবে না। কিন্তু ঠাকুরমা হ্যারিকেনের আলো জ্বালিয়ে তাকে পড়তে বসতে বলছেন। কিন্তু ইলেকট্রিকের আলোয় অভ্যাস হয়ে গেছে। বিলুর হ্যারিকেনের আলোয় পড়তে ইচ্ছা হয় না। তার উপর বাদল সন্ধ্যা। ঠাকুরমার আঁচল ধরে বিলু বলল, ‘আজ আর পড়ব না ঠাকুরমা, একটা গল্প বল।’ তখন বিলুর বাবা অফিস থেকে এসে পড়েছেন এবং ঘরে ঢুকে শুনতে পেলেন যে বিলু তার ঠাকুরমাকে গল্প বলতে বলছে। বিলুর বাবা ভীষণ রেগে গেলেন। বিলুকে বললেন, ‘সামনে তোর পরীক্ষা আর তুই ঠাকুরমাকে গল্প বলতে বলছিস, দাঁড়া ত দেখি।’ তখন বিলু তাড়াতাড়ি ঠাকুরমার আঁচল ছেড়ে পড়তে বসতে লেগে গেল। তার আর ঠাকুরমার কাছে গল্প শোনা হল না।