ছোটদের কথা
ছোটদের কথা
এক সময় এক রাজা ছিল। তাঁর নাম ছিল সুদর্শন। তাঁর ছিল তিন ছেলে। তাঁদের নাম বহুশক্তি, উগ্রশক্তি আর অনন্তশক্তি। রাজা নিজে জ্ঞানী এবং শক্তিশালী। কিন্তু পুত্ররা গণ্ডমূর্খ। কেউ পড়াশোনা করত না। লেখাপড়ায় অষ্টরম্ভা, শুধু খেলা আর খেলা। অথচ রাজার অবর্তমানে তাদের রাজ্য শাসন করতে হবে। সেজন্য রাজা সুদর্শন ছিলেন খুব দুশ্চিন্তায়। তাঁর ঘুম হত না। ছেলেরা যাতে পরবর্তী রাজা হয়ে শাসনব্যবস্থার উপযুক্ত হয়ে ওঠে, সে ব্যাপারে মন্ত্রী, আমলা, বিজ্ঞজনদের পরামর্শ চাইতেন।
বিজ্ঞ সুমতি তাঁকে পরামর্শ দেয়, বিজ্ঞান, রাজনীতি, কূটনীতি এসব বিষয় সীমাহীন— প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থায় আয়ত্ত করা খুব কঠিন, সারা জীবনের কর্ম নয়! তাই রাজপুত্রদের ধর্মগ্রন্থ বা শাস্ত্র পড়িয়ে কোনও কাজ হবে না, বরং তাঁদের এমন কিছু শেখানো হোক যাতে তাদের অন্তর্নিহিত জ্ঞানের বিকাশ হয়— এ রকম একজন পণ্ডিত মানুষ বেনারসে থাকেন।
বেনারস থেকে সেই পণ্ডিতকে আমন্ত্রণ জানিয়ে রাজা সুদর্শনের রাজদরবারে নিয়ে আসার ব্যবস্থা হল। পণ্ডিত সদলবলে রাজদরবারে উপস্থিত হলে, রাজা তাঁকে রাজপুত্রদের উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলবার অনুরোধ করলেন। বললেন, পারিশ্রমিক হিসেবে তাঁকে একশোটি ভূমি দান করবেন।
পণ্ডিত বিনীতভাবে বললেন, আমি তো অর্থের বিনিময়ে বিদ্যা বিক্রি করি না। তবে এই কাজটি করার জন্য আমার ছ-মাস সময় লাগবে। আশা করি তারমধ্যেই রাজপুত্ররা রাজনীতি ও নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়ে পারদর্শী হয়ে উঠবে।
পণ্ডিত বুঝেছিলেন রাজপুত্রদের প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা সম্ভব নয়। তিনি একটি পদ্ধতি অবলম্বন করলেন।
হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের দেশে পরিবারের প্রবীণ মানুষরা— ঠাকুমা দাদু দিদারা, কাজের অবসরে ছোটোদের গল্প শোনাতেন।
পণ্ডিত সেই রকম তাদের গল্প শোনাতে শুরু করলেন।
[ছোটদের কথা’র ছোট পড়ুয়া, তোমরা কি সেই সব গল্প শুনতে আগ্রহী? তাহলে দেখা হবে আগামী সংখ্যায়।]