ছোটোদের কথা
ছোটোদের কথা
কল্পনা আমার সেজ ননদ। আমার প্রয়াত স্বামী কল্পনার সেজদাদা। আমার স্বামীর কর্মসূত্রে আমরা সেই যে রাজস্থানে এসেছি তারপর থেকে আমরা রাজস্থানের জয়পুরের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেছি। তাই এতোখানি দূরত্বের কারণে সামনা সামনি দেখা সাক্ষাৎ আমাদের হয়তো খুব বেশি হত না, কিন্তু ফোনে কথাবার্তার মধ্যে দিয়েই সব খবরাখবর দেওয়া নেওয়া হত। কল্পনা সম্পর্কে আমার ননদ হলেও ও ছিল আমার বন্ধুর মতো, নিজের বোনের মতো। শুধু আমাকে বলে নয়, চার বৌদিকেই যে কল্পনা কী ভীষণ ভালোবাসত, শ্রদ্ধা করত, সে বলে শেষ করা যায় না। তাই আমার মেয়ে মুন্নি যখন কল্পনার চলে যাবার খবরটা আমাকে জানালো, আমি কিছুতেই যেন বিশ্বাস করতে পারছি না কল্পনা নেই! কত কথা মনের মধ্যে ভীড় করে আসছে! শেষ যে বার বর্ধমানে গেলাম কত কিছু যে আমাদের জন্য কত যত্ন করে রান্না করল! আমাদের পেলে ওর গল্পের শেষ হত না! ভীষণ ভালোমনের একজন মানুষ ছিল কল্পনা, আমাদের সবাইকে ও যেন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসত! কল্পনাকে দেখেছি বরাবরই খুব সাহসী, ডাকাবুকো আর স্পষ্ট কথা বলার মানুষ। কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে ও কখনো ভয় পেত না। রাজনীতির সঙ্গেও ওর যেমন ভীষণ যোগ ছিল তেমনি নানারকম সামাজিক দায়দায়িত্ব পালনেও ওর উৎসাহের অভাব ছিল না। খুবই পরিশ্রমী। শিক্ষিকা হিসেবেও তো যথেষ্টই সুনাম ছিল ওর। আমার সঙ্গে ওর মনের খুব মিল হত, তাই আমিও ওকে খুবই ভালোবাসতাম। আমার ভাবতে খুবই কষ্ট হচ্ছে যে কল্পনা আমাকে ছেড়ে চলে গেল, আমি আর ‘সেজবৌদি’ বলে সেই আন্তরিক ডাকটা কোনদিন শুনতে পাব না!