ছোটোদের কথা
ছোটোদের কথা
দশম শ্রেণি, মহারাণী অধিরাণী গার্লস হাইস্কুল
বর্তমান যুগে স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তা ভাবনা ও শিক্ষা বিশেষ ভাবে প্রভাব ফেলেছে। স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন আধ্যাত্মিক নেতা এবং একজন দার্শনিক। তিনি উনিশ শতকের এক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। হিন্দু ধর্মের পুনরুজ্জীবনের জন্য তিনি অনেক সভা করেন। তাঁর চিন্তাভাবনা, বর্তমান যুগে যুবকদের অনুপ্রাণিত করে। তাঁর চিন্তা ভাবনা সমস্ত বয়সী মানুষদের ওপর প্রভাবশীল।
শিকাগো সম্মেলনে বিবেকানন্দের গুরুত্ব :
শিকাগো সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দের ভাষণ বিশেষ ভাবে প্রভাব ফেলে ছিল। তাঁর মহামূল্যবান ব্যক্তিত্ব সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েছেন। তিনি আধ্যাত্মিকতার সাথে জীবনযাপনের গুরুত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর বাণী আজকের দিনের মানুষকে শিক্ষা দিয়েছে, নিজের জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, জীবনে সাফল্য অর্জন করার জন্য, ভালো ভাবে জীবনযাপন করার জন্য। তার মতামত এবং বাণী খুবই গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান পরিস্থিতির জন্য। (শিকাগো সম্মেলন ১৯৯৩ সালে সংঘটিত হয়)
আত্মবিশ্বাস, শিক্ষা ও নিজের ওপর বিশ্বাস সম্পর্কে বিবেকানন্দের বিশেষ গুরুত্ব :
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন যে কখনও অন্যের ওপর নির্ভর না করে নিজের ওপর ভরসা ও বিশ্বাস রাখো। অন্যের ওপর বা অন্যের কথা নিজের ব্যক্তিত্বকে নষ্ট হতে দিও না। নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াও। নিজের দায়িত্ব নিজে নাও। সম্পদ বা সামাজিক মর্যাদার ওপর অহংকার না করে, নিজের প্রতিভাকে জাগিয়ে তোলো। নিজের প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলে জীবনে এগিয়ে যাওয়াকেই প্রকৃত সাফল্য বলে মনে করেন স্বামী বিবেকানন্দ। বর্তমান যুগে অনেকেই স্বনির্ভর হতে সক্ষম হচ্ছে, তাঁর অনুপ্রেরণায়।
ধর্মের ঐক্যবদ্ধতা সম্পর্কেও স্বামী বিবেকানন্দের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা :
স্বামী বিবেকানন্দ বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে বলেন। তিনি সব ধর্মের মানুষকে সম্মান করতেন। ভিন্ন মানুষের ভিন্ন মতামত এবং বিশ্বাসকে তিনি নিজে সম্মান করতেন এবং অন্যদেরও সম্মান করতে বলতেন। স্বামী বিবেকানন্দের এই ধর্মের ঐক্যবদ্ধতা বর্তমান যুগে বিশেষ ভাবে প্রাসঙ্গিক। তিনি সাধারণ মানুষকে শান্তিতে বাঁচতে শিখিয়েছেন। সাধারণ মানুষকে তার কথা অনুপ্রাণিত করে।
মিস্ নোবেলের ভারতে আগমন :
স্বামী বিবেকানন্দের মতামতে অনুপ্রাণিত হয়ে মিস্ নোবেল ভারত সংস্কারের জন্য এদেশে উপস্থিত হন। বিবেকানন্দের মতাদর্শ অনুযায়ী মিস্ নোবেল ওরফে ভগিনী নিবেদিতা ভারতের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সরব হন। যদিও বর্তমান যুগে এখনও কিছু কুসংস্কার রয়েই গেছে, কিন্তু তাদের কর্মপন্থা র্বতমানে মানুষকে কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে, আধুনিকতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। বর্তমান নারী সমাজও অনেক এগিয়ে।
স্বামী বিবেকানন্দের গুরুত্ব বর্তমান যুগে অপরিসীম। যা লিখে খুব কম অংশেই প্রকাশ করা যায়। মানব সমাজের অগ্রগতির জন্য তাঁর অবদানের অন্ত নেই। তার কাছে আমরা সকলেই কৃতজ্ঞ। বর্তমান যুগে তরুণদের সাফল্যের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের গুরুত্বের কোনো অন্ত নেই।
উপসংহার : স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাধারা, শিক্ষা, আত্মনির্ভরশীলতা প্রভৃতির ওপর ভিত্তি করে বলা যায় যে বর্তমান যুগে মানুষের সাফল্য ও অগ্রগতির জন্য তাঁর গুরুত্ব অপরিহার্য। তাঁর এই বিপুল দানের জন্য আমরা তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
শিশু নিকেতন, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫, বিবেকানন্দের জন্মদিনে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় ‘ক’ বিভাগে তৃতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত।