ছোটদের কথা
ছোটদের কথা
এক দুই তিন চার পাঁচ ছয় সাত আট নয় দশ... বিলে মনে মনে গুনে চলল। গোনা শেষ হলে বিলের মন আজ খুশিতে ভরে গেল। যাক, সবকটা কাকই এসেছে তাহলে।
বিলে মিলিকে বলল— দেখ দেখ, ছোটোবোনু, সবাই এসে হাজির হয়েছে।
মিলি হেসে বলল— সে তোর মুখ দেখেই আমি বুঝে গেছি— আমার এক মিনিটের বড়ো দাদা। রুটি দিতে দিতে বিলে কাকেদের বলে— কে আগের ক-দিন আসনি? কেন?
একটা কাক কা কা করে বলল— আমরা হলাম গিয়ে পাতিকাক। আমার এক দাঁড়কাক দাদা আছে। ক-দিন তার বাড়িতে ঘুরে এলাম। সেখানে একজনের মুখে শুনলাম— আমাদের নাকি অনেক নাম আছে। সে লোকটা এমন তড়বড় করে বলে গেল যে, সবই ভুলে বসেছি। একটা কেবল মনে আছে— বায়স। আর একটা মজার কথা বলি— দাঁড়কাক দাদা বললে— রায়বাবু, মানে সুকুমার রায়ের লেখা ‘হ য ব র ল’তে দাঁড়কাক দাদার কথা লেখা আছে। তোমরা পড়ে বলবে কেমন লাগল, কেমন?
বিলে আর মিলি দুজনাই বলল— পড়েছি তো। খুব ভালো লেগেছে। ওঃ হাসতে হাসতে পেট ফেটে যায় আর কী!
কাকেরা রুটি খেল। মাটির গামলায় রাখা জল খেল। কাকেদের গলার আওয়াজ যাতে মধুর শোনায় সে কথা ভেবে মিলি করে কি, ওই গামলার জলে কয়েক চামচ মধু মিশিয়ে দেয়। কাকেরা রোজ সেই জল খেলেও ওদের গলার আওয়াজ একই থেকে যায়! তাই নিয়ে ওর মনে খুব দুঃখু। বোনের রকম দেখে বিলে মুচকি মুচকি হাসে। তবে বারণও করে না। ঘটনাটা ওদের বাবা-মাও জানে। ওঁরাও মিলিকে বারণ করেন না। বরং ওদের মা কুসুম কুসুম গরম জলে রোজ সকালে মধু আর কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস গেলাসে ঢেলে ওদের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলেন— শুধু কাকেদের খাওয়ালেই হবে? নিজেরাও খাও। তোমাদের খেতে দেখলে ওরাও বেশি বেশি করে গামলার জল খাবে।