ছোটদের কথা
ছোটদের কথা
২৩ এপ্রিল ২০২৫ বিশ্ব পুস্তক দিবসে শিশু নিকেতন স্কুলে ‘ছোটদের কথা’ ও ‘কিশোর জগৎ’ পত্রিকা আয়োজিত গল্প লেখা প্রতিযোগিতার পুরস্কারপ্রাপ্ত
আমি একদিন কলকাতার একটি চিড়িয়িখানায় আমার মায়ের সঙ্গে গিয়েছিলাম। আমি অনেক প্রজাতির পশুপাখি দেখেছিলাম তারমধ্যে আমার সবথেকে ভালো লেগেছিল ডোরা কাটা বাঘ। আমার পশুপাখি অনেক ভালো লাগে। আমি যে শুধু কলকাতার চিড়িয়াখানায় গেছি তা নয়— আমি বর্ধমানের ডিয়ার পার্কে গেছি। ওখানে তেমন কিছু ছিল না। চিতাবাঘ ছিল সেটিও ভালো লেগেছে। ডিয়ার পার্কে আমি একটি অলস ভাল্লুক দেখেছি, যেখানে পশুগুলি ছিল সেই জায়গাটা একটি বিরাট বড়ো জাল দিয়ে ঘেরা ছিল। আমি না বুঝে সেই ভাল্লুকের কাছে হাত বাড়াতে গিয়েছিলাম, সেই সময় ভাল্লুকটি আমার দিকে আস্তে আস্তে এলো। আমি ভাবলাম ভাল্লুকটি আমাকে ভয় দেখাবে। কিন্তু ভাল্লুকটি আমার কাছে এসে বসে পড়ল। আমি ছিলাম ওই বিশাল বড়ো জালটির বাইরে ও ভাল্লুকটি ছিল জালটির ভিতরে। ভাল্লুকটি বসে আছে। আমি তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তারপর ভাল্লুকটি জালের একদম কাছে এসে ঘাড় নাড়াতে লাগল। আমি ভাবলাম ভাল্লুকটি আমার কাছে খাবার চাইছে। আমার ব্যাগে একটি বিস্কুটের প্যাকেট ছিল। আমি যেই বিস্কুটের প্যাকেটটি বের করলাম, আমার মা বললেন, কী হল বিস্কুট খাবি? আমি বললাম, না। তারপর মা বললেন, তাহলে বার করলি কেন? আমি বললাম, মা এই ভাল্লুকটাকে দেখতে পাচছ? মা বললেন, হ্যাঁ। কেন? আমার কাছে ও খাবার চাইছে তাই আমি ওকে বিস্কুট দিচ্ছিলাম। মা বললেন, বোকা মেয়ে আমার। আমি বললাম, আমি বোকা কেন হতে যাব! তারপর মা বললেন, কোনো চিড়িয়াখানায় পশু বা পাখিদের খাবার দেওয়া যায় না, যারা এই জায়গাগুলি দেখাশোনা করেন তারাই খাবার দেন। যারা এই পশুপাখি গুলিকে দেখতে আসে তারা নয়। আমি বললাম, আচ্ছা মা কিন্তু ওই ভাল্লুকটি যে আমার কাছে খাবার চাইছিল। মা বললেন ওদের একটা খাবার টাইম আছে, তখন ওদের খাবার খাওয়ানো হয়। আমি বললাম এইখানে তো বাঘ, সিংহ আরও অনেক হিংস্র পশু আছে তারা ওদেরকে আঘাত করবে না, যারা খাবার দিচ্ছেন, মা বললেন, না ওদের নানারকম নিয়ম আছে যাতে পশুগুলি ওদেরকে আঘাত করতে পারবে না। আমি বললাম আচ্ছা। তারপর পার্কটি বন্ধ করার সময় হয়ে গেল। আমি ও আমার মা দুজনে বাড়ি চলে গেলাম। এটি সবথেকে আমার প্রিয় জায়গা ঘুরতে যাওয়ার। এরপর থেকে আমার মনে পশুপাখির প্রতি ভালোবাসাটা আরও বেড়ে উঠল। এখন আমার মনে হয় ওই ভাল্লুকটি আমার কাছে খাবার চায়নি ও আমার পাশে এসে বসে ছিল আদর খাওয়ার জন্য।