ছোটদের কথা
ছোটদের কথা
রবি মামা দেয় হামা। এমন সময়ে বিলে আর মিলির ঘুম ভেঙে গেছে। আজও গেছে। ওরা এই সময় বাসি রুটি টুকরো করে কাকেদের খাওয়ায়। ওরা দালানে এসে দাঁড়ায়। রুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে উঠোনে ফেলে। একটা দুটো করে কাক আসতে শুরু করেছে। কা কা ডাকে উঠোন সরগরম।
দু-দিন ধরে বিলের মনটা খারাপ। গুনতিতে একটা কাক কম। বিষয়টা ছোট বোনু মিলিকে জানায়নি। ওকে না জানালেও মিলি বোঝে বিলের মনটা ঠিক ভালো নেই।
মিলি বলল— এই এক মিনিটের দাদা, মুখ দেখে বুঝতে পারছি, তোর একটা কিছু হয়েছে। কী হয়েছে রে?
—কিছু হয়নি। বিলে বলে।
—কিছু হয়নি বললেই হবে? কী ভাবছিস বল তো? তোর মুখ ভার থাকলে আমার ভালো লাগে? আমি তো বাবা সব কথা তোকে পেট খুলে বলে দিই। তুই আমাকে বলবি না?
বিলে আর কী করে। নিজের ভাবনাটা আর চেপে রাখতে পারে না। মিলির কাছে বলেই ফেলে।
—দেখ, দু-দিন হল একটা কাক আসছে না। কী হল বল তো?
মিলি যেন তৈরিই ছিল। বলল— এই কথা? ওই কাকটার হয়তো শরীর খারাপ হয়েছে। যা নোংরা টোংরা ওরা খায়! ওদের আদর করে কে আর ভালো খাবার দেয়?
আমাদের অসুখ-বিসুখ হতে পারে আর ওদের হতে পারে না? ওদের অসুখ হলে ওরা নিজেরাই সারিয়ে নেয়। এত ভাবিস না।
বিলে বলল— কোথায় যে থাকে তা তো আমাদের জানা নেই। জানা থাকলে খোঁজ খবর নেওয়া যেত।
মিলি বলল— আমরা বরং একটা কাজ করতে পারি।
বিলে কৌতুহলের সাথে বলল— কী কাজ ছোটো বোনু?
মিলি বলল— যে যে কাকেরা এসেছে তাদের আমরা দু-জনে বলি, ওরা যেন খোঁজ নিয়ে আসে।
বিলে বলল— এ ছাড়া তো উপায় নেই।
কাকেরা ওদের দু-জনকে ভয় পায় না। ওরা কাছে গেলে উড়ে পালায় না। বিলে মিলি এগিয়ে গিয়ে জনে জনে বলল— যে-কাক অসতে পারেনি তার একটা খবর নিও তো।
কাকেরা ঘাড় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে জানান দিল— আগামীকালই খবর নিয়ে আসবে।