ছোটদের কথা
ছোটদের কথা
খাবারটা খেতে গিয়ে লাগলো খুবই মন্দ,
বললাম, তাই, ঘর থেকে বেরোনো হ’ল বন্ধ।
ঘরে বসে ছবি আঁকি,
স্নান করায় পড়লো ফাঁকি,
তখন সবাই বলল আমায়, তোর গায়ে খুব গন্ধ!
গোলাপ ফুল খুব সুন্দর
গায়ে কেন কাঁটা?
কাঁঠাল খেতে গেলেই কেন
হাতে লাগে আঠা?
গন্ধরাজে গন্ধ আছে
সাদা হয় কেন?
এত ফুল থাকতেও
সবার গন্ধ নেই কেন?
এত পাখি থাকতে কেন
ময়ূর এতো ভালো?
এত পতঙ্গ থাকতে কেন জোনাকি দেয় আলো?
অনেক চেষ্টা করে অরূপ একটা চাকরি পেয়েছে। গরীব তো, তাই চাকরি পেয়ে খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। যখন সে ফোনে চাকরির খবরটা শোনে তখন সে তার মাকে বলে, ‘‘তোমাকে কী বলেছিলাম? একটা না একটা চাকরি পাবোই।’’ চাকরিটা ছিল বেসরকারি, কিন্তু মাইনে আশি হাজার টাকা। মা তো খুব খুশি— কত চেষ্টার পর ছেলে একটা চাকরি পেয়েছে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর লোকের বাড়িতে কাজ করে গেছে, নিজে খাবার না খেয়ে তার ছেলেকে খাইয়েছে, ছোটোবেলা থেকে ছেলেকে মা-ই মানুষ করেছে, কারণ ছোটোবেলা থেকেই ছেলে বাবা-হারা। মা কাজ করতে যেত ভোর সাড়ে পাঁচটায়। কিন্তু ছেলের স্কুল বেলা সাড়ে দশটায়। বাড়িতে রান্না করে, ছেলেকে ঘুম থেকে উঠিয়ে সে কাজ করতে বেরোতো। কোনও কোনও দিন ছেলে ও তার মা না খেয়ে রাত কাটিয়েছে, কারণ হাতে কোনও টাকা ছিল না। এমনও দিন গেছে যে, ঝড় উঠেছে, তাদের ঘরের একটা দিক ভেঙে পড়েছে, তাদের সারা রাত কোনও একটা দোকানের শেডের নীচে থাকতে হয়েছে। ঠান্ডাতে ছেলে কাঁদছে, মা নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে কোনওমতে ছেলেকে আঁকড়ে রেখেছে। সেই ছেলে আজ একটা চাকরি পেয়েছে। তাই মা এত খুশি। কারণ, বাবা ছাড়া ছেলেকে মানুষ করা কতটা কষ্টের তা একমাত্র অরূপের মা-ই জানে। খুশিতে মায়ের চোখে জল এসে গেল। এদিকে, চাকরি করতে যেতে হবে এই গ্রাম থেকে অনেক অনেক দূরের এক শহরে, থাকতে হবে সেখানেই— এটা ভেবেও মা অস্থির হয়ে উঠল। অরূপ বলল, ‘‘মা, কাঁদছ কেন? আমি তো কিছুদিনের মধ্যেই তোমাকে এখান থেকে নিয়ে যাব আমার কাছে। তুমি চিন্তা কোরো না। আমি কিছু মাসের মধ্যেই টাকা জমিয়ে এই বাড়িটা মেরামত করব। তারপর একদিন না একদিন আরও ভালো চাকরি নিয়ে এই বাড়িতে ফিরে আসব। এই বাড়িতে আমার বাবার স্মৃতি রয়ে গেছে যে!’’