ছোটদের কথা
ছোটদের কথা
লে মিলিদের একটা মেনি বিড়াল আছে। সেই বিড়ালের চেহারা দেখলে তোমরা চমকে যাবে। এত বড়ো বিড়াল সচরাচর দেখা যায় না। গায়ের রং সাদার ওপর জায়গায় জায়গায় বাদামি ছোপ ছোপ দাগ। আর ওর বাদামি রঙের লেজটা দেখবার মতো। যা মোটা! বিড়ালটাকে তোমরা দেখলে মনে করবে ডোরাকাটা দাগ ছাড়া বাঘের ছানা বটে! বড়োদের মুখে শুনে থাকবে বিড়ালকে বাঘের মাসি বলে ডাকা হয়। ওকে দেখার পর তোমরাই বলবে কথাটা মিছে নয়।
এই বিড়ালকে নিয়ে বিলে মিলির মাঝে মাঝে ঝগড়া লেগে যায়। ওরা দুজনেই যে খুব ভালোবাসে। তাই দুজনেই চায় একাই বিড়ালকে কোলে নিয়ে আদর করবে। ওরা বিড়ালটার একটা নাম দিয়েছে— সোমা। বিড়ালটা কোনো এক সোমবারে এসেছিল। সে তখন পুঁচকে! কোথা থেকে এসে ওদের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। রাত তখন বেশি হয়নি। বিলে মিলি তখন পড়াশোনা করছিল। সোমার মিউ মিউ ডাক শুনে ঘরের বাইরে এসে ওকে দেখে তো দুজনেই অবাক! ওরা সাথে সাথে মাকে ডেকে আনে। বিলে মিলি দুজনেই ওকে পুষবে বলে বায়না ধরে। মা কিছু বলার আগেই মিলি সোমাকে কোলে তুলে নেয়। আদর করতে থাকে। বিলে বলে— আমাকে একটু দে বোনু। মিলি তখন বলে— দাঁড়া, এক মিনিটের বড়ো দাদা, আমি আগে একটু আদর করে নিই।
রাতে ওদের বাবা এসে সব শুনে বললেন— ঠিক আছে। থাক তবে। আর একটা কথা। ওকে আদর করা হয়ে গেলে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলবে, কেমন? সেই থেকে সোমা মিলিদের বাড়িতে থেকে গেল।
সোমা খুব ভালো। ওর সামনে মাছ কেটে ফেলে রাখলেও ও মুখ দেবে না। দুধের বাটি খোলা থাকলেও মুখ দেবে না। ওর থালা বাটি আছে। তাতে ভাতের সাথে মাছ মেখে দিয়ে ওর সামনে বসিয়ে ওকে ‘খাও’ বললে তবে ও খাবে। মুড়ি খেতেও ভালোবাসে। সোমা থাকায় বিলে মিলিদের বাড়িতে ইঁদুরের দেখা পাওয়া খুব মুশকিল।
বিলে মিলি ওদের অবসরে সোমার সাথে খেলা করে। একটা বল গড়িয়ে দিয়ে সোমাকে আনতে বললে ও চট করে দৌড়ে গিয়ে পা দিয়ে খেলতে খেলতে এনে দেয়।
সোমার খুব অভিমান আছে। ওকে একটু বকলে বা ওর সাথে জোরে কথা বললে সোমা খাওয়া-দাওয়ার পাট চুকিয়ে দেয়! তখন গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করতে হবে। বেশ কিছুটা পরে ও যদি ‘মা-ও-ও’ বলে ডেকে ওঠে তখন খাবার দিলে চেটেপুটে সাফ করে দেয়!