ছোটোদের কথা
ছোটোদের কথা
দেখতে দেখতে আবার এসে গেল আর একটা শরৎ। শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর মাটিতে সাদা কাশের মেলা। শরৎ মানে শারদ উৎসব। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। নতুন জামা কাপড়ের গন্ধ। বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনেও কত আয়োজন। ছোট বড় সবার জন্য কত ছোট বড় শারদীয় রঙবেরঙ এর পত্র-পত্রিকার সমাহার। পুজোর ক’টা দিন মণ্ডপে কত লোকের সমাগম। বৎসরান্তের এই আনন্দ উৎসবের জন্য তোমরা গভীর আগ্রহে দিন গুনছ।
কিন্তু তোমরা এবার নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৯ আগস্ট রাতে কর্মরত একজন তরুণী চিকিৎসকের রহস্যজনক মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন। তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তোমাদের অনেকের বাবা মা, সমাজের সর্বস্তরের মানুষ রাতের পর রাত ‘বিচার চাই’ দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছেন। সংবাদপত্র বলছে স্বাধীনতার পর একজন প্রতিভাময়ী তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ন্যায় বিচার চেয়ে পশ্চিম বাংলা সহ গোটা দেশ এবং দেশ পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এত বড় স্বতঃস্ফূর্ত শান্তিপূর্ণ গণজাগরণ আগে কখনও হয়নি। তাই এবার শারদোৎসবে সংবেদনশীল মানুষের মন ভারাক্রান্ত।
এরই মধ্যে অতিবর্ষণের ফলে দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলি জেলায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল ব্যাপক বন্যার কবলিত হয়ে পড়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ পুজোর আগে ঘরবাড়ি ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। এই সামাজিক এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেই আসছে এবারের পুজো। তাই এবার পুজোর আনন্দের দিনগুলিতে আশা করব তোমরা আনন্দের পাশাপাশি তোমাদের প্রতিবেশী দুর্গত মানুষের কথা মনে রাখবে, নিজেদের সামর্থ্য মত তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা জানাবে। মনে রাখবে—
‘আপনারে লয়ে বিব্রত থাকিতে আসি নাই কেহ অবনী’ পরে।
প্রত্যেকে মোরা প্রত্যেকের তরে।’